আমাদের ক্লাসের ফার্স্টবয়ের নাম আভণীশ, আভণীশ সরকার। এক সময় ভালো বন্ধু ছিল। ক্লাস সিক্স থেকে তেমন কথা বলে না। সেভেন থেকে একদম পাত্তাই দেয় না। পার্থক্যটা কী, কোনোসময় বুঝে উঠতে পারিনি। সে সময় কী হয়ে গেল তার, কী কারণে বন্ধুত্ব শেষ করে দিল। কিছু ভালো দক্ষতাসম্পন্ন ছেলেদের বড় হলে কিসের রোগে ধরে তা কখনোই বুঝতে পারিনি।
আজ চতুর্থ ক্লাসের পর ছুটি হয়ে যাওয়ার কথা। যথারীতি হয়ে গেল। কিন্তু স্যার চলে যাওয়ার পর আভণীশ এসে আমাদের বেঞ্চের সামনে দাঁড়াল, “সিনান, ভালো প্রতিভাধর ছেলে ছিলি। কী ইসলামের ইতিহাস পড়ে সময় নষ্ট করছিস, সাথে দিয়ে আছে রোবট আর তারিকের মতো কিছু রাস্তার পোলাপান। নিজের সময় সব বরবাদ করছিস।”
আভণীশ এর কথা শুনে তারিক জ্বলে যাচ্ছে। শুধু কালো বলে চেহারার লাল আভার পরিস্ফুটন হচ্ছে না। আমি রাগ না করলেও কষ্ট পেলাম। সিনান আড়চোখে দাঁতভাঙা জবাব দিল, “সালিহ আলাইহিসসালামকেও তার আশপাশের মানুষরা এই কথাই বলত।[১] দেখেছিস, আল্লাহ আগের থেকেই জানতেন যে, তুই এমন কথা বলবি। এজন্য তিনি সতর্ক করে দিয়েছেন। আর ধন্যবাদ, তোর মতো মূর্খ মানুষদের কাছে গালি খেলেই আমি সৎ পথে আছি। এটা একটা নিদর্শন।”
ওরে মাইর! আভণীশ আমাদের যা বলে আঘাত করেছিল, সিনানেরটা তো তার থেকেও বেশি কড়া। আভণীশ বাইরে কোনো প্রতিক্রিয়া দেখাল না। শান্ত ভাবে বলল, “অশিক্ষিত বলছিস কাকে? রোল ১ কে? পাঁচ বছর ধরে?”
“তোর স্কুল রেজাল্ট, তোর সার্টিফিকেট কোনো শিক্ষার বহিঃপ্রকাশ না। শিক্ষা বলতে বুঝাচ্ছি শিক্ষা ও মনুষ্যত্ব আর বই পড়া প্রবন্ধে যা বুঝানো হয়েছে, তা। দু বছর ধরে তো ফার্স্ট হওয়ার জন্য পড়ছিস, শিখার জন্যও পড়ে দেখ দু-একবার।”
সিনানের আঘাত আভণীশ গায়ে মাখল না। ব্রিলিয়ান্টদের মধ্যে ডিবেট দেখার মজাই আলাদা। কী অসাধারণভাবে নিজেদের ব্রেইন, নিজেদের জিহ্বা কন্ট্রোল করে তারা। কী চমৎকার ভাবে নিজেদের ইমোশন নিয়ন্ত্রণ করে!
আভণীশ মেইন পয়েন্টে আসল, “এসব বিজ্ঞানীদের নিয়ে গর্ব করার মানে কী, আমার বুঝে আসে না। সেসব বিজ্ঞানী আদতে মুসলিম ছিল কি ছিল না, তাও গর্বকারীদের জানা থাকে না। কেউ একজন অবদান রাখতে পারলেই তাকে নিয়ে লাফানো শুরু করে দেয়। যেমন সাবিত ইবন কুররা, হুনাইন ইবন ইসহাক, কুস্তা ইবন লুকা কেউই মুসলিম ছিল না। ইবন সিনা নামে মুসলিম হলেও প্র্যাকটিস করত কই!”
সিনানের দিকে তাকালাম। কেন সে চুপ করে আছে, কিছুই বুঝতে পারছি না। ইতোমধ্যে ভালো সংখ্যক দর্শকও জমে গিয়েছে। “আবার আরেকজন আছেন আবু বকর মুহাম্মাদ ইবন যাকারিয়্যা আর-রাযী। কেমিস্ট্রি আর মেডিসিন, দুই ক্ষেত্রেই কাঁপিয়ে দিয়েছেন। ৪-৫ টা বিষয়ের জনক বলা চলে। মুসলিম পরিবারে জন্ম গ্রহণ করলেও এই অন্ধবিশ্বাসে পড়ে থাকেননি। হয়ে গেলেন অ্যাপস্টেট। মুসলিমদের পবিত্র গ্রন্থ, তাদের নবী কোনোকিছুকেই গালাগালি করতে ছাড়েননি। তারপরও এসব আত্মমর্যাদাহীন মানুষরা তাকে নিয়ে গর্ব করে আকাশ ফাটিয়ে দেয়। তারপর আবার এসব মুসলিমরাই ঘুরেফিরে আমাকে এসে বলে মূর্খ।”
আভণীশ যদিও অ্যারোগেন্ট, কিন্তু তার টেকনিক খুবই ভালো। আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে নিজের মাথা না খুইয়ে অপেক্ষা করে সঠিক সময় আসার। তখন প্রতিপক্ষের মগজ বের করে আনে। দুঃখজনক কথা হচ্ছে, সে নন-মুসলিম হওয়ার পরও এমন কন্ট্রোল দেখাচ্ছে; আর তারিক, আমি, আমরা মুসলিম হওয়ার পরও ক্ষেপে গিয়ে একদম সব হারিয়ে বসে থাকি।
“হয়েছে তোর?” সিনান বলল। “হুম।” “তো এবার আমি বলি?”
সিনান লম্বা চালাল, “আবু বকর রাযীর ব্যাপারটি খুবই অস্পষ্ট করা হয়েছে। আল-বিরুণী তাকে নিয়ে ভালো কাজ করেছেন। ইসলাম নিয়ে আবু বকর রাযীর জঘন্য কথাবার্তা অনেকাংশ আসে আবু হাতিম আর-রাযী নামের একজন থেকে। তিনি আবু বকর রাযীর বিরুদ্ধবাদী ছিলেন। তার উপর ছিলেন ইসমাইলী। ইসমাইলীরা তাদের সাথে বিতর্ককারীদের খুন পর্যন্ত করত। আবু বকর রাযী ইসমাইলীদের পছন্দ করতেন না এবং তাদের সমালোচনাও করেছেন হুলুস্থুল। তাই নাসির খসরু, শাহরাস্তানী ইত্যাদি ক্লাসিকাল স্কলাররা মনে করেন, আবু হাতিম রাযীর লেখাগুলো বিশ্বাসযোগ্য না।[২] বর্তমান সময়ের সেরা সেরা স্কলাররাও এমন মত দেন। কায়রো ইউনিভার্সিটির আব্দুল লতিফ বলেন, আবু হাতিম রাযী আর হামিদুদ্দ্বীন কারমানী ভুল ভাবে আবু বকর রাযীর চিন্তাধারা উপস্থাপন করেন। পিটার এডামসন বলেন, তারা ইচ্ছা করেই এমন করেছেন।
বরং আবু বকর রাযী শুধু নবুয়তের প্রমাণে অলৌকিক জিনিসের ব্যবহার, অবতারবাদের বিরোধিতা করছিলেন। এগুলোয় কোনো সমস্যা নেই। আর আসলে, আবু হাতিম রাযী যে তার বইয়ে আবু বকর রাযীকেই টার্গেট করে লিখেছেন, সেটা প্রমাণিত না। তিনি নাম না নিয়ে বরং ‘মুলহিদ’ বলে সিগিনিফাই করেছেন। তার লেখায় যথেষ্ট দিক আছে যা দেখে মনে হয় যে এখানে আবু বকর রাযীকে নিয়ে কথা বলছেন না। এমনকি ফাখর আল-দ্বীন আর-রাযী বর্ণনা করেছেন যে, আবু বকর রাযী নিজের মত প্রমাণের জন্য কুরআন এবং নবীদের কথার ব্যবহার করেছেন[৫] তাছাড়া তিনি তার আল-তিব্ব আর-রুহানী বইয়ের শুরুতেই যুক্তির মতো একটি চমৎকার জিনিস মানুষদের দান করার জন্য আল্লাহর ভূয়সী প্রশংসা করেছেন।[৬] ধর্মবিদ্বেষীরা সাধারণত এমন করে না। আবু বকর রাযীর অনেক মু’তাযিলী ও মুতাকাল্লিমদের সাথে সংঘাত ছিল, কিন্তু জীবনেও কেউ তাকে ইসলাম বিরোধী বা এগিয়ে গিয়ে মুলহিদ বলে নি। যে বলেছে সে ইসমাইলি শি’আ!
নিরপেক্ষ থাকব। পল ক্রাউস আর সারাহ স্ট্রুমসা, আবু হাতিম রাযীর বর্ণনা গ্রহণ করেছেন। আর ইবন সিনাও আবু বকর রাযীর ব্যাপারে বলেছেন যে, তার মূত্র পরীক্ষা নিয়েই লেগে থাকা উচিত ছিল। যা পারে না, মানে অধিবিদ্যা, তা করতে গিয়েছে কোন দুঃখে! কিন্তু রাযীর উপর অভিযোগ আনায় অনেক ওরিয়েন্টালিস্ট যে মূল বই ব্যবহার করেন, সেটা ইচ্ছাকৃত ভাবে ভুলভাবে অনূদিত। তার উপর, সঠিক ভাবে যদি অনুবাদ হতও, তবু খুব সম্ভবত রাযী সেটা লেখেননি। দ্বিতীয় যে বই ব্যবহার করা হয়, সেটা আল-বিরুণীর লিস্টেই নাই! এমন অবস্থা। ইসলাম নিয়ে তার দুইটা বই আছে ফি উজুব দা’ওয়াত আল-নাবি আলা মান নাকারা বি আল-নুবুওয়াত ও ফি আন্না লি আল-ইনসান খালিকান মুতকিনান হাকিমান।
এই দুইটা কনসিডারেশনে আনলে পুরোপুরি প্রমাণিত হয়ে যায় যে আল-রাযী কোনভাবেই অধর্মীয় মানুষ ছিলেন না, বরং ধর্মপ্রাণ মুসলিম বিজ্ঞানী ছিলেন। প্রথমটা নবি-অস্বিকারকারীদের ইসলামী দা’ওয়াত নিয়ে আর পরের টা আল্লাহকে নিয়ে লেখা বই। কিন্তু এই দুই কাজ কেউ কনসিডারেশনে আনে না! যারা দাবী করে আবু বকর রাযী “মুক্তমনা” ছিলেন, তারা এমন বইয়ের রেফারেন্স দেন যেটা আবু বকর রাযী লেখেনইনি! ইমাম যাহাবী তার সিরিয়াস প্রশংসা করে বলেছেন যে আবু বকর রাযী কখনোই নবুয়ত বা অন্য কোন গুরুত্বপূর্ণ কিছু ডিনাই করেন নাই।[৩৮] তোর কী মনে হয় তাহলে, আভণীশ?”
“তাকে মুসলিম বানানোর জন্য তোরা কিছু প্রমাণ বানিয়ে নিয়েছিস আর কি।”
“সবচেয়ে শক্ত প্রমাণ আসছে পিটার এডামসনের কাছ থেকে, তিনি তো আর মুসলিম না! আবার হ্যাঙ্ক গ্রিন এর মতে, আবু বকর রাযী ‘যা খুশি তা’ করলেও ইসলামী নাবাউই চিকিৎসা সম্বন্ধেও লিখছেন। তিনি কুরআনে বর্ণিত তথ্য হতেও চিকিৎসা বের করার চেষ্টা করেছিলেন।[৩২]”
আভণীশ কিছু বলল না। সিনান মানসিক চড় লাগাল, “অবশ্য তার মুসলিম হওয়া না হওয়া দিয়ে কিছুই যায় আসে না, তার সাফল্যের ক্রেডিট শেষ পর্যন্ত ইসলামেই আসে।” এবার আমি না, আশপাশের সকলে সিনানের দিকে হা করে তাকিয়ে থাকল।
আভণীশ কিছুটা জোরেই বলল, “মানে কী!”
“প্রাক-ইসলাম আরবে বিজ্ঞানের বোম ফাটেনি কেন আর ইসলাম আসার পরই বা এত্ত উঁচু স্থানে বিজ্ঞান চলে গেল কীভাবে?”
“কী আর, প্রাক-ইসলাম যুগে আরবে এত টাকা ছিল না।”
“কই, আব্দুল্লাহ ইবন আরকাম, আব্দুর রহমান ইবন আউফ, উসমান ইবন আফফান রাদিয়াল্লাহুআনহুম এবং আরও অনেকে তো তখনও অনেক ধনী ছিলেন।”
“তো কী হয়েছে! তাদের মাথায় বিজ্ঞানের পেছনে ইনভেস্ট করার বুদ্ধি ছিল না।”
“এই তো লাইনে এসেছিস! তো ইসলাম আসার পর আরবদের মাথায় এই বুদ্ধি আসল কোথা থেকে?”
তাদের মাথায় বুদ্ধি কীভাবে আসল, তা চিন্তা করতে করতে আভণীশ নিজের মাথা চুলকাল। কিছুই বলতে পারছে না। “তুই কী বলতে চাচ্ছিস, সোজা করে বল।”
দেখ, ইসলাম বিজ্ঞানের একটা পরিবেশ সৃষ্টি করেছিল। জর্জ সারটনকে তো চিনিস, তিনিও এই মতে সমর্থন দেন।[৭]। এটা অনেক বড় একটা ব্যাপার। ঐ সময় এমন মানুষ পাওয়া কঠিন ছিল, যে জ্ঞান অর্জন করত না।[১১] এখন, অন্তত, আমাদের দেশে তেমন কোনো পরিবেশই নেই। এরকম পরিবেশ বানানোর জন্য বিভিন্ন সংস্থা ক্রমাগত কাজ করে যাচ্ছে, কিন্তু পারছে না। ইসলাম এই পরিবেশ বানিয়ে দিয়েছিল। আর এর ফলেই একের পর এক বিজ্ঞানী বের হয়ে আসছিল।
উদাহরণ দিই। দেখ, আমরা সবাই একটা ভালো কলেজে ভর্তি হতে চাই, কেন? পড়ালেখা তো নিজের কাছে, তাই না? তবুও আমরা ভালো কলেজে ভর্তি হতে চাই, কারণ সেখানে পড়ালেখার একটি উন্নত পরিবেশ আছে, শহরের সবচেয়ে সেরা সেরা শিক্ষার্থী থাকে সেখানে। এটা পড়ালেখায় সহায়তা করে। তো ঐ সময়ে যখন একজন দেখছে চারপাশে হুলুস্থুল ভাবে বিজ্ঞান করা হচ্ছে, তখন স্বাভাবিক ভাবেই একজন মানুষ এতে আকৃষ্ট হয়ে পড়ে।
এখন, মুসলিমরা ইসলামের পথে কাজ করতে চাইত, এজন্য আরও কমিটমেন্টের সাথে কাজ করত। ইসলাম বিভিন্নভাবে বিজ্ঞানীদের উৎসাহিত করত। এখন লাখ লাখ টাকা খরচ করে বিভিন্ন সংস্থা যা করতে পারছে না, ইসলাম দিয়ে আল্লাহ তা নিমিষেই করে দেন। তার উপর বিজ্ঞানীদের আরও আলিমদের সমান সম্মান দেওয়া হত। আমার আরগ্যুমেন্ট হলো, ইসলাম না থাকলে এসব বিজ্ঞানীদের কোন অস্তিত্বই থাকত না। আবু বকর রাযী, হুনাইন ইবন ইসহাক, সাবিত বিন কুররা এমনকি ইহুদিদের সর্বশ্রেষ্ঠ দার্শনিক মুসা ইবন মাইমুন বা Maimonidesও ইসলামের কাছে ঋণী। এমনই ঋণী যে, ইসলাম না থাকলে তাকেও কেউ চিনত না, সর্বশ্রেষ্ঠ হওয়া তো দুরে থাক।
দেখ, সাধারণত তাদের ‘মুসলিম’ বলতে মুসলিম জাতির মধ্যে গণ্য করা হয়। মানে তারা যদি মুসলিম সাম্রাজ্যের স্থায়ী বাসিন্দা হন এবং ইসলামী ঐতিহ্যের ধারক হন, তাহলে তাকে মুসলিম জাতির অন্তর্ভুক্ত করা হয়। এমন বোঝাতে ইংরেজিতে বড় হাতের M ব্যবহার করা হয়। আর অর্থগত ভাবে মুসলিম বোঝাতে ব্যবহার করা হয় ছোট হাতের m। সরাসরি অবশ্য ‘মুসলিম’ বলা হয় না। তবে ‘মুসলিম বিজ্ঞানী ও দার্শনিক’ এর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। সিম্পল জিনিসঃ অর্থগত ভাবে মুসলিম হোক আর না হোক, তারা ‘মুসলিম বিজ্ঞানী ও দার্শনিক’দের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত। ”
আশেপাশের দর্শকদের দিকে তাকিয়ে, “তবে ভিতরে ঢুকলে কিছুটা জটিলতা আছে” আবার আভণীশ এর দিকে, “কিন্তু তারা শুধু ইসলামী কালচারের মধ্যেই ছিলেন না, বরং ইসলাম থেকেই সরাসরি প্রভাবিত, বিশালভাবে”
“কীভাবে! তুই এটি প্রমাণ করতে পারবি?”
“পারলে মেনে নিবি যে, ইসলামের কারণে বিজ্ঞানীরা সাফল্য অর্জন করেছিলেন?”
আভণীশ ইতস্তত করল। তারপর বলল, “আচ্ছা ঠিকাছে”।
“ওকে, আগামীকাল দেখা হবে তাহলে।”
পরদিন সিনান এসে আভণীশকে কয়েক পৃষ্ঠার একটা চিঠি দিল। আমরা তো কৌতূহলে ফেটে পড়ছি। কিন্তু বোম মেরেও সিনানের মুখ থেকে কোনো কথা বের করতে পারলাম না। একদম ছুটির সময় সে আভণীশকে গিয়ে বলল,
“তো বুঝেছিস, আভণীশ? কার ধর্মবিশ্বাস কী রকম, তা দিয়ে কিছুই যায় আসে না। ক্রেডিট ঘুরে ফিরে ইসলামের কাছে আসে। তাই ইতিহাসবিদরা ইসলামিক সায়েন্স, ইসলামিক ফিলোসফি, ইসলামিক হিস্ট্রির বইয়ে সাবিত ইবন কুররা, মাইমনিডিস, হুনাইন ইবন ইসহাকদের রাখলে তাতে অবাক হওয়ার কিছুই নেই। ।”
আভণীশ কিছু না বলে ব্যাগ নিয়ে চলে গেল। হতবিহ্বল এই আমরা তখন আভণীশের ফেলে যাওয়া কাগজেরগুচ্ছ তুলে পড়ার সুযোগ পেলাম।
কুরআন
[১২] কুরআনে প্রাকৃতিক ঘটনা নিয়ে ৭৫০ টির মত আয়াত রয়েছে।[১৩] এসব বিশাল ভাবে প্রভাবিত করে মুসলিম বিজ্ঞানীদের। কিছু উদাহরণ পর্যালোচনা করি-
আলে-ইমরান (১৯০): যারা দাঁড়িয়ে, বসে ও শুয়ে আল্লাহ কে স্মরণ করে এবং আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবীর সৃষ্টি সম্বন্ধে চিন্তা করে… (Astronomy)
আন’আম (৯৭): তিনিই তোমাদের জন্য নক্ষত্র সৃষ্টি করেছেন যেন তার দ্বারা স্থলের ও সমুদ্রের অন্ধকারে তোমরা পথ পাও (Astrolabe)
নাহল (৬৯): নিঃসন্দেহে এর মধ্যে অনেক নিদর্শন রয়েছে তাদের জন্য, যারা নিজেদের মস্তিষ্কব্যবহার করে (Philosophy)
ইউনুস (৫): তিনিই সূর্যকে তেজস্কর ও চন্দ্রকে জ্যোতির্ময় করেছেন এবং তার মনযিল নির্দিষ্ট করে দিয়েছেন যেন তোমরা বৎসর গণনা ও সময়ের হিসাব জানতে পার (Mathematics)
র’দ (৪): পৃথিবীতে রয়েছে পরস্পর সংলগ্ন ভূখণ্ড, এতে আছে আঙ্গুর বাগান, শস্য ক্ষেত্র, একাধিক শিরা বিশিষ্ট অথবা এক শিরা বিশিষ্ট খেজুর-বৃক্ষ সিঞ্চিত একই পানিতে, এবং ফল হিসেবে তাদের কিছুকে কিছুর উপর আমি শ্রেষ্ঠত্ব দিয়ে থাকি… (Botany)
‘আনকাবুত (২০): বল, ‘তোমরা পৃথিবীতে পরিভ্রমণ কর এবং অনুধাবন কর, কীভাবে তিনি সৃষ্টি শুরু করেছেন!… (Geography)
হাদীদ (২৫): আমি লৌহ অবতরণ করেছি যাতে রয়েছে প্রচণ্ড শক্তি ও রয়েছে মানুষের জন্য বহুবিধ কল্যাণ… (Mechanics)
নামল (৬৪): তোমরা যদি সত্যবাদী হও তবে তোমাদের প্রমাণ পেশ কর (Scientific Method)
তাছাড়া কুরআনে বারবার বিভিন্ন প্রাকৃতিক ঘটনা বর্ণনা করার পর বল হচ্ছে, “তোমরা কি চিন্তা কর না” “এতে নিদর্শন রয়েছে তাদের জন্য যারা চিন্তা করে” ইত্যাদি। [১৩] [১৪]
হাদিস
[১৬] হাদিসের ক্ষেত্রে, বিশেষত মুহাম্মাদ (স) জ্ঞান অর্জনের জন্য যেসব দিক নির্দেশনা দিয়েছেন তার জন্য বিজ্ঞানীরা অনুপ্রাণিত হয়েছেন।
Cosmetology: আল্লাহ সুন্দর এবং তিনি সুন্দরকে ভালোবাসেন (মুসলিমঃ ১৬৬)
Acquiring Knowledge: মানুষ যখন মৃত্যুবরণ করে তখন তার আমলের সুযোগও বন্ধ হয়ে যায়। কিন্তু তিনটি আমলের সওয়াব বন্ধ হয় না। এক, সাদাক্বাহ জারিয়া। দুই, এমন জ্ঞান যা দ্বারা মানুষ উপকৃত হয় এবং নেক সন্তান, যে তার জন্য দু’আ করে। (আবু দাউদঃ ২৮৮০)
Geography: যে ব্যক্তি জ্ঞান অর্জনের জন্য কোন পথে চলে, আল্লাহ তার জন্য জান্নাতের পথ সহজ করে দিবেন। (রিয়াদুস সালেহীনঃ ১৩৮২)
Medicine: প্রত্যেক রোগের জন্য ঔষধ আছে… (হাদিস সম্ভারঃ ১২৩৩)
এখানে কিছুই উল্লেখ করা হয় নি। আরও অসংখ্য হাদিস আছে যার দ্বারা বিজ্ঞানীরা অনুপ্রাণিত হয়েছিলেন।[১৭]
স্বীকারোক্তি
ইয়াকুত আল-হামাউইর ‘মুজামুল বুলদান’ এক অসাধারণ জিওগ্রাফিকাল বই। এটি আজ পর্যন্ত ব্যবহৃত হয়। তার ভূমিকায় তিনি লেখেন, কুরআন থেকে এই কাজ করতে তিনি অনুপ্রাণিত হয়েছেন।[১৯] এখানে উল্লেখযোগ্য, তার বাবা-মা গ্রীক। তিনি পরবর্তীতে ইসলাম গ্রহণ করেন।
মুহাম্মাদ আল-খাওয়ারিযমী লেখেন, তার কাজের অনুপ্রেরণা এই চিন্তা থেকে এসেছে যে, যারা তার থেকে শিখবে, তারা আল্লাহর কাছে তার জন্য দু’আ করবে[২২]।
ইসমাইল আল-জাযারীর ধার্মিকতা তার কাজ হতে স্পষ্টত ফুটে উঠে। ইবন আল-নাফিস তো নিজেই আলিম ছিলেন। আল-জাহিযও একজন আলিম ছিলেন এবং সম্ভবত একমাত্র ব্যাক্তি যিনি কুরআনের তিন ধরণের অলৌকিকতা নিয়ে কাজ করেছেন।[৩৪] ইবন আল-হাইসামও ধর্মপ্রাণ মুসলিম ছিলেন।[২৩]
আল-কিন্দী গভিরভাবে কুরআনের লেখা পর্যবেক্ষণ করেন, যার মাধ্যমে তিনি ক্রিপ্টোগ্রাফি এর ভিত্তি প্রতিষ্ঠা করেন।[২৪]
ইবন সিনার মতে মুহাম্মাদ (স) সর্বশ্রেষ্ঠ দার্শনিক। কেননা অন্যান্য দার্শনিকের বেলায় তাদের কথার সত্যতা প্রমাণ সম্ভব নয়, কিন্তু মুহাম্মাদ (স) এর বেলায় সে নিশ্চয়তা আছে। কেননা তার কথা আসছে সরাসরি আল্লাহ হতে।[২৫] ইবন সিনা ফিলোসফিকালি, বর্তমানের ভাষায় বললে সায়েন্টিফিকালি দৈহিক পুনরুত্থান (Bodily Resurrection) প্রমাণে অপারগ হন। তারপরেও তিনি এতে বিশ্বাস করেন কেবলমাত্র নবী বলেছেন এই কারণে (সামি’না ওয়া আত’না)।[৩৫]
আলী ইবন রাব্বান আল-তাবারী সেরা একজন ফিজিশিয়ান ছিলেন। তার ফিরদাউস আল-হিকমা এক মুল্যবান বই। তিনি বলেন, খৃষ্টান থাকা অবস্থায় তার দাদা তাকে বলছিল যে শব্দ অলংকরণ খুবই স্বাভাবিক একটা জিনিস যা সবাই করতে পারে। ধর্মগ্রন্থে এমন কিছু থাকলেই তাকে সত্য বলে গ্রহণ করতে নেই। কিন্তু আলী আল-তাবারী যখন কুরআন পড়লেন, তিনি বুঝলেন যে এটি কোন মানুষের শব্দ অলংকরণ না। এর মতো আর কোন বই নেই। তিনি এমন কিছু আরবি, ফার্সি, ভারতীয় বা গ্রীক, কোন বইয়ে পাননি। আবার তিনি জানতে পারলেন যে এই বই নাকি এক উম্মি লিখেছেন! তিনি নিশ্চিত হলেন যে এটি সত্য গ্রন্থ, আল্লাহ থেকে প্রেরনকৃত। অতঃপর ইসলাম গ্রহণ করলেন।[৩৩]
একদম শেষ সময় পর্যন্ত ইসলামের এই অচিন্তনীয় প্রভাব বর্তমান ছিল। ১৬শ শতকের সবচেয়ে সেরা মুসলিম বিজ্ঞানী তাক্বি আল-দ্বীন ইবন মা’রুফ ক্বাদি ছিলেন আর আলিমদের সাথে সর্বদা সম্পর্ক রক্ষা করে চলতেন।[৩৭]
ঘটনা
গণিতের বিশাল উন্নতি সাধিত হয়েছিল ইসলামী উত্তরাধিকারের অংক এবং যাকাতের অংক করে করে। সালাতের সময়, কিবলার দিক নির্ণয়ের জন্য অনেক যন্ত্র তৈরি হয়েছিল।[১৮] বিজ্ঞানীরা একেই সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিতেন। তার উপর, কুরআন-সুন্নাহ তে মহাকাশ এর বিভিন্ন বর্ণনা থাকায় ইসলামের বিজ্ঞানে জ্যোতির্বিদদের সংখ্যা অন্য সব ধরণের বিজ্ঞান হতে বেশি।[২৬] প্রত্যেক মুসলিম কে আদেশ দেওয়া হয়েছিল জ্ঞান অর্জন করতে আর সে জ্ঞান কে কাজে পরিণত করতে যেন তা সমাজের উন্নতি ঘটায়।[২৬] সকল বিষয়ের বিজ্ঞানীগণ তাদের কাজ করাকে এক ধরণের ধর্মীয় দায়িত্ব মনে করতেন[২০]। ভূতত্ত্ব নিয়ে যত ধরণের সেরা মানের কাজ পাওয়া যায়, সবগুলোতেই ইসলাম আর কুরআনের বিরাট প্রভাব স্পষ্ট।[২১]
সালাতের সময় নির্ধারণের জন্য বিজ্ঞানের নতুন শাখাই সৃষ্টি হয়ঃ ইল্ম আল মিক্বাত। ইসলামী মাস হয় চাঁদের হিসাবে। এটির সঠিক হিসাব থাকা জরুরী রমাদান ও অন্যান্য কারণে। বিভিন্ন বিজ্ঞানী এ সমস্যা সমাধানে উঠে পড়ে লেগে যান। এই সময়ে সাবিত বিন কুররা এক অসাধারণ পদ্ধতি আবিষ্কার করেন এটি নির্ণয়ের জন্য।[২৯] এবার বুঝ, ইসলামের প্রভাব এতই বেশি ছিল যে, নন-মুসলিমরা পর্যন্ত ইসলামের কাজ করে দিচ্ছিল!
গ্রিক বা ইন্ডিয়ান বিজ্ঞানে ত্রিকোণমিতিক অনুপাত বলতে কিছু ছিল না, শুধু সাইন বাদে। সালাতের সময় বের করতে গিয়ে মুসলিমরা সেটি আবিষ্কার করেন।[২৮] আসরের সালাতের সময় বের করা অন্য গুলোর তুলনায় কঠিন ছিল। তো এই সমস্যা সমাধানের জন্য মুসলিমরা নতুন নতুন প্যারামিটার আবিষ্কার করেনঃ সৌর অয়নবৃত্তের বাঁক বা inclination of the ecliptic, অপভূ এর গতি, অয়নচলন এর হার, সূর্যের কেন্দ্রীয় দূরত্ব, নতুন সৌর সমীকরণ” সিনান হেসে দিয়ে বলল, “এখন, আমরা যদি একটু খেয়াল করি, এগুলো হল আধুনিক অ্যাস্ট্রোনমি এর মৌলিক প্যারামিটার সমুহ! মুসলিমরা শুধুমাত্র আসরের নামাযের সময় বের করতে গিয়ে কি করে ফেলেছে দেখ একবার![৯]”
বর্তমান সময়ের স্কলারদের বর্ণনা
দেখ, আসলে জ্ঞানী মহলে এমন কোন ডিবেট নাই। সেখানে মুসলিম বিজ্ঞানীদের উপর ইসলামের বিশাল প্রভাবের কথা স্বীকৃত, যে ইসলামের কারণেই মুসলিম বিশ্বে জ্ঞান চর্চা ছড়িয়ে যায়।[৩১] রিচার্ড ডকিন্স এর বন্ধু, ব্রিটিশ হিউম্যানিস্ট এসোসিয়াশন, বারট্র্যান্ড রাসেল এককালে যার প্রেসিডেন্ট ছিলেন তার সাবেক প্রেসিডেন্ট, নাস্তিক বিজ্ঞানী জিম আল-খালিলী মাইকেল ফ্যারাডে এ্যাওয়ার্ড জিতার পর স্পিচে বলেন, ইসলামই ছিল তৎকালীন বিজ্ঞানের উচ্চতায় পৌঁছার মূল কারণ।[৩০] এখানে শুধু একটি উক্তিই বর্ণিত করছি।
ব্যাপারটি সুন্দর ভাবে ফুটে উঠেছে হার্টউইগ হারশফেল্ড এর কথায়, ‘আল-কুরআন কে যে জ্ঞানের ঝর্ণার উৎসমুখ হিসেবে বিবেচনা করা হয়, এটা দেখে অবাক হওয়ার কিছু নেই। আকাশ-পৃথিবী থেকে শুরু করে মানবজীবন, ব্যবসা-বাণিজ্য প্রভৃতির সাথে সম্পর্কিত প্রতিটি বিষয় এখানে স্থান পেয়েছে। ফলে এই পবিত্র গ্রন্থের বিভিন্ন অংশের ব্যাখ্যা হিসেবে রচিত হয়েছে বিষয়ভিত্তিক অগণিত প্রবন্ধ-রচনা। এভাবে বিভিন্ন বিষয়ের উপর ব্যাপক আলোচনা, এবং পরোক্ষভাবে মুসলিম বিশ্বে বিজ্ঞানের নানা শাখার বিস্ময়কর অগ্রগতির জন্য আল-কুরআনই দায়ী।[১০]
আমি আর তারিক একরকম খামচাখামচি করে পড়লাম। কাগজ কতগুলোর জন্য পারলে একজন আরেকজনকে মেরে ফেলি! আমাদের ভয়ংকর প্রতিরূপ দেখে আশেপাশের আর কারো পড়তে যাওয়ার সাহস হল না। পড়া শেষে অন্যদের দিয়ে এবং সিনানকে নিয়ে বের হলাম।
হাটতে হাটতে বাসায় যাওয়ার পথে তার অনেক প্রশংসা করলাম, অতঃপর মুখে বালি খেলাম আর শেষে তাকে বললাম, “আজ তো কাঁপিয়ে দিয়েছিস, কিন্তু কাল যে আভণীশের সাথে এত শক্ত ভাষায় কথা বললি, সেটা কি ঠিক হয়েছে?”
সিনান আমার চোখের দিকে তাকিয়ে বলল, “Just because we’re humble to the heart, doesn’t mean we don’t go hard”[৮]
Notes and References:
1. কুরআন ১১:৬২
2. S. H. Nasr and M. Aminrazavi (edt), An Anthology of Philosophy in Persia (I.B. Tauris publishers, 2008) vol. 1, p: 411
3. Abdul Latif Muhammad al-Abd (1978). Al-ṭibb al-rūḥānī li Abū Bakr al-Rāzī (Cairo: Maktabat al-Nahḍa al-Miṣriyya) যেমন দেওয়া আছে তার উইকি পেজে।
4. https://bit.ly/3jTNsbI
5. Marenbon, John. The Oxford Handbook of Medieval Philosophy (Oxford University Press, 2012) pp. 69–70.
6. Abu Bakr al-Razi, al-Tibb ar-Ruhani (Translated by Arthur J. Arberry, London: 1950)
7. Muhammad Abdul Jabbar Beg. “The Origins of Islamic Science” Muslim Heritage.
8. Ahmed Deedat style!
9. George Saliba, “How the Asr Prayer led to Modern Astronomy” online video, YouTube.
10. Hartwig Hirschfeld, New Researches into the Composition and Exegesis of the Qoran (London: Royal Asiatic Society, 1902) p. 9.
11. ‘বিজ্ঞানের ইতিহাস’ দ্রষ্টব্য
12. আল-কুরআনুল কারীম (ইসলামিক ফাউন্ডেশন); Qur’an: A Short Journey (onereason publishing) ব্যবহৃত হয়েছে।
13. Hamza A. Tzortzis. “Embryology in the Qur’an” HamzaTzortzis.com.
14. বিশেষ দ্রষ্টব্য: একজনের এটা বোঝা উচিত যে এখানে যেভাবে দেখানো হয়েছে তা দিয়ে কুরআনের আয়াতগুলোর ইন্টেন্ডেড মিনিং বোঝানো হয় নি। কেবল মাত্র মুসলিম বিজ্ঞানীদের উপর কিরুপ প্রভাব পড়েছে তা দেখানোর চেষ্টা করা হয়েছে।
15. Caner Taslaman, The Qur’an: The Unchallengeable Miracle (Nettleberry/Çitlembik Publications, 2006) দেখুন আরও আয়াতের জন্য
16. Ihadis apps থেকে
17. আরও কয়েকটির জন্য দেখুনঃ Zaghlul el-Naggar, Treasures in the Sunnah: a Scientific Approach (al-Falah Foundation, 2004)
18. CrashCourse History #14 এ জন গ্রীণ এর খোলা চিঠি দেখুন; Muzaffar Iqbal (Chapter 3) দেখুন বিস্তারিত জানার জন্য। এছাড়াও অসংখ্য বইয়ে এর বর্ণনা দেওয়া আছে।
19. Muzaffar Iqbal, p: 39
20. Muzaffar Iqbal, p: 41
21. Muzaffar Iqbal, p: 58
22. Muzaffar Iqbal, p: 42
23. তার wikiquote পেজ দেখুন
24. “Global Communication” in “The World” in 1001 Inventions.
25. Karen Armstrong, p: 216
26. Sonja Brentjes and Robert G. Morrison op. cit. p: 587
27. Sonja Brentjes and Robert G. Morrison op. cit.p: 593
28. Sonja Brentjes and Robert G. Morrison op. cit.: 594
29. Sonja Brentjes and Robert G. Morrison op. cit.p: 595
30. Jim al-Khalili, “The House of Wisdom and the legacy of Arabic Science” online video, YouTube ; J. al-Khalili, Pathfinders.
31. D.E. Smith and L.C. Karpinski, The Hindu-Arabic Numerals (Ginn and Company Publishers, 1911)
32. Hank Green, “Ancient & Medieval Medicine — Crash Course History of Science #9” online video, Crash Course.
33. Abdul Aleem. “ ‘Ijaz-ul-Qur’an” in Marmaduke Pikthal (edt), Islamic Culture: The Hyderabad Quarterly Review (vol. 7, Hyderabad: n.p., April 1933) pp. 215–238. p. 222.সম্পূর্ণ উক্তি ইংরেজিতে পড়ুন তার উইকিকুয়োট পেজে।
34. Bassam Saeh, The Miraculous Language of the Qur’an: Evidence of Divine Origin (International Institute of Islamic Thought, 2015) pp. 7–9.
35. Morteza Hoseinzadeh. “The Methodology of Ibn Sina in Acquisition of Religious Knowledge” International Journal of Humanities and Cultural Studies, June 2016. pp: 105–113.
36. আরও দেখুনঃ Arman Firman, “Influence of Islam on Science” available at: medium.com/@armanfirman
37. Salim Ayduz. “Ottoman Contributions to Science and Technology” Muslim Heritage.
38. https://bit.ly/39EIOJX