যখন ডক্টর ইউনুস আর আবেদ সাহেবরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে উপকারের নামে মানুষকে সুদে ঋণ দিয়েছে, তখন আমরা কেউতো কর্যে হাসানা দিতে কারো বাড়ি যায়নি? তারা সুদের পাইওনিয়ার হয়েছে আপনি-আমি কেন কর্যে হাসানার পাইওনিয়ার হলাম না? মসজিদে সুদের বয়ান দিয়েছেন কিন্তু দারিদ্র্য বিমোচনে যাকাত কালেকশন, কর্যে হাসানার প্রজেক্ট কেন চালু করেননি? করতে পারলাম না!
ইসলাম মানবতার ধর্ম কিন্তু আগে কখনোতো মসজিদের ইমামকে, মসজিদ কমিটির মানুষকে গরীবের পাশে দাঁড়াতে দেখলাম না। তখনতো আবেদ সাহেবরা কাজ করেছে। এখন আলহামদুলিল্লাহ অনেক চেঞ্জ হয়েছে তবে তা সবার মাঝে ফুটে উঠেনি। কিছু তরুন আলেম সত্যি দৃষ্টান্ত তৈরি করেছেন। কিন্তু অনেক দেরি হয়ে গিয়েছে।
তার ইউনিভার্সিটিতে হিজাব নিষিদ্ধ করেছে আমরাতো হিজাব পড়তে উৎসাহ দেয় এমন একটা ইউনিভার্সিটি করতে পারলাম না? (একবার এরকম কিছু একটা হয়েছিলো, পরে থেমে গিয়েছে)। আড়ংয়ের কাপড়ের ভিতরে সব ছবি থাকে কিন্তু আমরাতো এরকম মানসম্পন্ন একটা প্রতিষ্ঠান করতে পারলাম না?
নর্থ-সাউথে পড়তে দিলো না আম্মু কারণ ওখানে জঙ্গি হয়। তাহলে কোথায় পড়বো? ব্রাকে কারণ ব্রাকের মান অনেক ভালো। আমি বললাম, না আমি ব্রাকে পড়বো না, এটা এমন একটি সুদী প্রতিষ্ঠানের অংশ। বাসার মানুষ আমাকে বলে তাহলে হুজুরদের বলো একটা ইউনিভার্সিটি খুলতে। আমরা শুধু মাদরাসা বানাবো তাহলে দেশের ৮৭% স্কুল, কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়াদের নিয়ে আমাদের কোন পরিকল্পনা নেই। তাদের নিয়ে দাওয়াতে রূপরেখা কি আমাকে বলতে পারেন কি?
তাই কোন মানুষকে গালি না দিয়ে ঐ মানুষের মন্দ কাজকে নিজেদের ভালো কাজ দিয়ে প্রতিহত করুন। কথা না বলে কাজ করে দেখান। বক্তৃতার ইসলাম না প্রাক্টিকেল ইসলাম তুলে ধরতে হবে আমাদের। ইসলামি অঙ্গনে জন্ম হোক এমন হাজারো সত্যিকারের আবেদ। আবেদ সাহেবকে তুলসী পাতা বানানোর জন্য এই পোস্ট না। নিজেদের অবস্থার বাস্তবতা তুলে ধরতে চেষ্টা করেছি। তারা তাদের মন্দ কাজের জন্য সারাজীবন দিয়ে গেল, কিন্তু আমি আমার হক দ্বিনের জন্য কি করলাম সেটাই বুঝাতে চেয়েছি। বরং তাদের কজের আসল রুপ ফুটে উঠেছে-
কবি- ইমতিয়াজ মাহমুদের লেখা ক্ষুদ্রঋণ নামক কবিতায়
“তারা আমার কাছে কিস্তির টাকা চাইতে এলো।
আমি তাদেরকে বললাম, মৃত মানুষের কোনো ঋণ থাকে না।
তারা বললো, কিন্তু তুমি তো এখনো মোরো নাই।
আমি তাদেরকে আমার ডেথ সার্টিফিকেট দেখালাম।
তারা বললো, এমন সার্টিফিকেট বাজারে কিনতে পাওয়া যায়।
আমি তাদেরকে আমার শেষকৃত্যের ভিডিও দেখালাম।
তারা বললো, ওরকম না মরেও বানানো যায়।
আমি মরিয়া হয়ে তাদেরকে আমার হাত কেটে দেখালাম যে, আমার শরীরে কোনো রক্ত নাই।
তারা বললো, রক্ত না থাকা কাউকে মৃত প্রমাণ করে না।
রক্ত না থাকা প্রমাণ করে, সে বেঁচে আছে এবং আমাদের ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়েছে।“
এন জি ও, মিডিয়া, রাষ্ট্র এবং আন্তর্জাতিক সাম্রাজ্যবাদ পরষ্পর সম্পূরক। এগুলো একই জগতের নানা গ্রহ। একই মূল্যবোধের ধারক, একই জীবনব্যবস্থার বাহক। তাই ফজলে হাসান আবেদ আর ইউনুস সাহেবদের কদর সেকুলার দেশে এবং মানবতার ফেরিওয়ালা নামক ইউরোপ আমেরিকায় এভাবে হওয়াটা স্বভাবিক। অথচ দেশের বৃহত্তম বেসরকারি সেবা ও শিক্ষা ও উন্নয়ন প্রতিষ্ঠান কওমী মাদরাসা এবং তার শিক্ষকরা থেকে যায় আলোচনার বাহিরে। তারা রাষ্ট্র, সমাজ, বিশ্ব এবং বিশ্ব মিডিয়ার থেকে শুধু সমালোচনাই পেয়ে থাকে। শিক্ষায় অসাধারণ অবদানের জন্য তো আহমেদ শফি হুজুরকে রাষ্ট্র বিশেষ স্বীকৃতি দেয় না। আসলে তাদের মিডিয়াগুলোকেই দোষ দিয়ে কি লাভ বলুন? আমরাতো নিজেদের কোন মিডিয়া তৈরি করতে পারলাম না। যা শুরু করি তা দলাদলি আর গ্রুপিংয়ের লেভেল এটে দেই। দিন শেষে ঐ প্রতিষ্ঠানগুলো মান হারায় এবং কিছুদিন না যেতেই ইতিহাসের অংশ হয়।
আফসোসের সাথেই বলছি, দেশের এই করোনার দূর দিনেও অনেক হুজুর সত্যি নিবেদিত ভাবে কাজ করছে কিন্তু আমরা তাদের বিভিন্ন দলে ভাগ করছি আর সমন্বয়হীনতার কারনে তা সকলের দৃষ্টিগোচর হচ্ছে না। গ্রামীন ফোন আর ব্রাক একসাথে ১ লাখ পরিবারের ১ সপ্তাহের খাবারের ব্যাবস্থা করছে শুনতেই কতো ভালো লাগে। অনেকে আফসোস করে বলে ইস! যদি ব্রাক কর্মী হতে পারতাম। তাদের আমরাই পৃষ্ঠপোষকতা করি।কিন্তু নিজেদের কোন প্রতিষ্ঠান নেই আর যা আছে তা বিভিন্ন দল ও মতের লেভেল জড়ানো , আমি বা আমরা ঈমান রক্ষার জন্য যে কোন দল বা মতের সাথে কাজ করি না করবোও না।তারপর বলবো আমাদের কিছু নেই কেনো। তারা নিজেদের মতবাদের জন্য সকল দলাদলি ভুলে এক সেজন্য তারা শক্তিশালী। আর আমরা……
আসলে কেউ অধিকার দেয় না অধিকার আদায় করে নিতে হয়। কেউ জায়গা দেয় না নিজের পায়ে দাড়াবার জন্য নিজেকেই জায়গা করে নিতে হয়। আমরা নিজেদের এখনো শক্ত অবস্থান তৈরি করতে পারিনি তাই আমরা তাদের কাছে নিগৃহীত। অবস্থানের জন্য দরকার দৃঢ় প্রত্যয় এবং আকাশের মতো বিশাল স্বপ্ন।