সদকায়ে জারিয়া বলে একটা ব্যাপার আছে। চেইন রিঅ্যাকশান। আপনি একটা ভালো কাজ শুরু করে দিলেন, সেটা চলতেই থাকলো। এইটার খুব সুন্দর উদাহরণ হিসেবে একটা টুইট দেখেছিলাম, মসজিদ নির্মাণের জন্য ডোনেট করা; ১০, ২০ টাকা; খুব সামান্য পরিমাণের হলেও, অথবা কোনো হাসপাতালে হুইল চেয়ার কিনে দেওয়া ইত্যাদি ইত্যাদি। তো একইভাবে, গুনাহে জারিয়াও আছে। গুনাহের চেইন। আপনি ছোট্টো একটা গুনাহের ব্যাপার প্রকাশ করলেন বা গুনাহের রাস্তা দেখিয়ে দিলেন, তা দেখে আরেকজন, তার থেকে আরেকজন, এভাবে চলতেই থাকবে।
কোয়ারেন্টাইনের এই সময়টাতে যারা টিভি সিরিজ, সিনেমা ইত্যাদির রিভিউ দিচ্ছেন, লিংক শেয়ার করছেন, ড্রাইভ শেয়ার করছেন, অন্যকে উৎসাহিত করছেন অবসর সময়ে দেখার জন্য, তারা কি বুঝতে পারছেন যে আপনি নিজেও এই গুনাহের চেইনে ঢুকে পড়ছেন? আমি ফতোয়া দিবো না, ওটা আমার কাজ নয়। এটুকু বলতে পারি, সিরিজে, মুভিতে যে মিউজিক, সিনগুলো থাকে সেগুলো নেকীর কাজ কি না সে প্রশ্ন আপনি নিজেকেই করতে পারেন।
এই সময়টায় আপনি খুব নেককাজ করতে না পারলেও, গুনাহ থেকে বেঁচে থাকতে পারেন, অন্যকেও বাঁচিয়ে রাখতে পারেন। আমি নিজের গুনাহের ভারেই তো নুয়ে পড়বো হাশরের মাঠে, সেখানে অন্যের গুনাহের ভার নেওয়ার সাধ্য কি আছে? ক্ষমা পেতে খুব বেশী নেককাজ করার আগে প্রয়োজন গুনাহ থেকে বেঁচে থাকা। মানে করোনার ট্রিটমেন্টের আগে বেশী প্রয়োজন লকডাউন করে প্রতিরোধ করার মতো। আমি ভালো কাজ করছি, গুনাহও করছি। আমাদের অবস্থা যেন ফুটো বালতি না হয়।
আমি এই পোস্টটা খুব ভেবেচিন্তে লিখিনি। মাথায় আসছে, লিখে দিলাম। যদি মারা যান, তো এই সময়ের গুনাহ আপনার আমলনামায় যোগ হয়ে গেলো। আর যদি বেঁচে থাকেন, তো ভবিষ্যতে হয়তো আফসোস হবে, এই ঘরে বসা সময়টায় প্রোডাক্টিভ কিছু করা যেতো। মহামারীতে মৃত্যু মুমিনের জন্য সৌভাগ্যের। করোনার চেইন রিঅ্যাকশন আপনাকে এই দুনিয়ায় ভোগাবে, তবে পরকালে মুমিন হিসেবে নাজাতের কারণও হতে পারে। কিন্তু গুনাহের চেইন রিঅ্যাকশন আপনাকে পরকালেও ভোগাবে।