তার হিজাব পরার কী দাম রইলো যদি সে এতই সাজগোজ করলো? তার দাড়ি রাখার কী দাম রইলো যদি সে তার দৃষ্টিকেই নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলো? তার পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ার কী দাম রইলো যদি সে ফূর্তিই করলো? যদি সে মদ খেলো? তার হজ করা,রোজা রাখার কী দাম রইলো যদি সে যিনাতেই লিপ্ত হতে থাকলো? প্লিজ, এসব বলে মানুষকে নিরাশ করবেন না। ইসলাম কাউকে নিরাশ করার রিলিজিয়ন না।
এসব সমালোচনাকারী লোকেরা ভুলে যায় যে মদ্যপান করে মদিনার এক ব্যক্তি রাসুল (সঃ)- এর নিকট দিনে ৫০ বারের অধিক আসতো। এমনকি লোকেরা যখন তাকে বিরক্ত করতো,রাসুল (সঃ) বলতেন, “ওকে ছেড়ে দাও। ও আল্লাহ এবং তাঁর রাসুল (সঃ) কে বিশ্বাস করে।”
যখন লোকজন একজন চোর সম্পর্কে আজেবাজে কথা বলতো এবং যেই চোর কিনা রাতের বেলা আল্লহর ইবাদত করতো আর দিনে চুরি করতো। রাসুল (সঃ) তাকেও ত্যাগ করেননি। কারণ সেই চোরের মধ্যে আল্লাহভীতি ছিলো।
তারা ভুলে গেছে সেই যুবকের কথা যে রাসুল (সঃ)-এর কাছে আসতো এবং যিনা করার পারমিশন চাইতো। রাসুল (সঃ) তাকেও ত্যাগ/ঘৃণা করেন নি। তাহলে হিজাবের ইমপারফেকশনটা কোথায় যেখানে রাসুল (সঃ) আমাদের শিখিয়ে গেছেন, একজন প্রস্টিটিউটও জান্নাতে যাবে শুধুমাত্র কুকুরের প্রতি দয়া দেখানোর জন্যে। (সুবহানআল্লাহ!)
অহংকারীর দীর্ঘ ইবাদতের থেকে নিরহংকারী গুনাহগার বান্দার চোখের পানি আল্লাহর নিকট অধিক পছন্দনীয়। আল্লাহ বান্দার মাঝে পারফেকশন চান না। আল্লাহ চান,তাঁর বান্দারা ভুল করে অনুতপ্ত হোক,জায়নামাজে চোখের পানি ফেলুক, তওবা করুক, পারফেক্ট হবার চেষ্টা করুক। আল্লাহ তো রেডি তাঁর গুনাহগার বান্দাদের ক্ষমা করে দেবার জন্য। রাসুল (সঃ) বলেন, “আল্লাহ সন্ধ্যা থেকে সকাল অবধি তাঁর ক্ষমার হাতকে প্রশস্ত করে দেন তাদের জন্য যারা নিজেদের গুনাহের জন্য অনুতপ্ত হয়, তওবা করে। পুব আকাশে সূর্যোদয়ের আগ পর্যন্ত আল্লাহ সবার তওবা একসেপ্ট করতে থাকেন।” (মুসলিম)
আমরা কেউই পারফেক্ট নই। কোনো স্কলার, ওলি, মুফতি পাপমুক্ত নয়, নিরপরাধ নয়। আমরা ফেরেশতা নই। আমাদের প্রত্যেকের নিজস্ব গুনাহ, অনুতাপ আছে। মিলিয়ন-বিলিয়ন গুনাহ করার পরেও আল্লাহর প্রতি আস্থা রাখা এবং আল্লাহর নিকট আশ্রয় চাওয়া ভণ্ডামির লক্ষণ না। এটা সেই লোকদের লক্ষণ যারা আল্লাহকে ভালোবাসে। এটা সেই লোকদের লক্ষণ যাদের মধ্যে ঈমান আছে।