তারুণ্য যেকোনো জাতির অমূল্য সম্পদ। তারুণ্যের দৃড় মনোবল, অপরিসীম সাহস ও কাজ করা দক্ষ মানসিকতাই পারে একটা জাতিকে চেঞ্জ করে দিতে। সভ্যতার উত্থান-পতনে তার বড় অংশই এসেছে তারুণ্যের হাত ধরে। তারুণ্যই সংস্কৃতি ও সভ্যতার উন্নয়নের মূল কারিগর। অফুরন্ত প্রাণ শক্তি আর সৃষ্টির উম্মাদনাই তারুণ্যের গৌরব। বদ্ধ কুঠিরের দুয়ার চূর্ণ করে যাওয়াটা এর অর্জন। চেতনাদৃপ্ত তরুণরা যখন জেগে ওঠে তখন সকল প্রতিবন্ধকতার চড়াই-উৎরাই মাড়িয়ে তারা বিজয় ছিনিয়ে আনে। বিজয়ের পুষ্পমালা তাদের পদচুম্বন করে। ইতিবাচক অর্জনসহ সকল সেক্টরেই থাকে তাদের অবদান। কেবল তরুণরাই পারে জাতিকে একটি শান্তির সমাজ উপহার দিতে।
তরুণরাই মাতৃভূমি রক্ষা ও দেশের ভূখন্ডকে অখন্ড ও নিরাপদ রাখার অকুতভয়ী যোদ্ধা হিসেবে দায়িত্ব পালন করে। তারা সদা জাগ্রত, নির্মোহ জ্ঞানের অধিকারী, সজীব, সাহসী ও নিষ্কণ্টক। তারা শারীরিক ও মানসিক শক্তির অধিকারী। তাই ইতিহাস গৌরবান্বিত হয়েছে সভ্যতার বাঁকে বাঁকে তারুণ্যের সাহসী ও বলিষ্ঠ পদচারণায়। ইসলাম তারুণ্যের শক্তি ও সাহসিকতায় যুক্ত করেছে নতুন এক সত্যের অনির্বাণ। মুসলিম তারুণ্যের মুখর পদচারণায়ই সম্ভব হয়েছে ইউরোপের বুকচিরে ইসলামের মশালকে তার মঞ্জিলে পৌঁছে দিতে।
আল কোরাআনেও গাওয়া হয়েছে এই তারুণ্যের জয়গান। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ’লা বলেন, “আল্লাহ তিনি দুর্বল (শিশু) অবস্থায় তোমাদের সৃষ্টি করেন অতঃপর দুর্বলতার পর শক্তিদান (যৌবন) করেন, অতঃপর শক্তির পর দেন দুর্বলতা ও বার্ধক্য।” [১] পাশাপাশি, সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে হিলফুল ফুজুলের মত চুক্তিভিত্তিক সংগঠন প্রতিষ্ঠা করে আল্লাহর রাসুল (সা.) তারুণ্যের জন্য রেখে গেছেন আদর্শের মোক্ষম দৃষ্টান্ত। সৃষ্টির শুরু থেকে আজ পর্যন্ত সভ্যতার গতি পরিবর্তনকারী ইতিহাসের প্রতিটি বাঁকে বাঁকে লেখা আছে তারুণ্যের বীরত্ব গাঁথা কথামালা। যার শুরুটা হয়েছে আল্লাহভীরু, তাকওয়াবান মর্দে মুজাহিদ ও সত্যের পথে প্রথম শাহাদাত বরণকারী তরুণ হাবিলের মাধ্যমে। যিনি ছিলেন ইবাদত গুজার, খোদা প্রেমের অনুরাগী। পৃথিবীর সকল তরুণের জন্য যিনি উত্তম আদর্শ স্বরুপ। যিনি আল্লাহর রজ্জুকে আকড়ে ধরে ছিলেন মনেপ্রাণে।
এছাড়াও, হযরত ইব্রাহিম (আ.) যখন মূর্তি পূঁজার বিরুদ্ধে আন্দোলন করতে গিয়ে পাষণ্ড নমরুদের অগ্নিকুন্ডে নিক্ষিপ্ত হয়েছিলেন তখন তিনিও ছিলেন তরুণ। হযরত ইউসুফ (আ.) যখন কারাগারে বন্দী ছিলেন তখন তিনিও ছিলেন চির তরুণ। হযরত ইউনুস (আ.) কে যখন সমুদ্রের মাছ গিলে ফেলে তখনও তিনি একজন তরুণ। হযরত দাউদ (আ.) যখন জালিম শাসক জালুতকে হত্যা করেন, তখন তিনিও ছিলেন টগবগে তরুণ। এরা কখনোই তাদের কার্য্যে হতাশ হননি। বরং দৃঢ় মনোবল, উদ্যোমী সাহস, প্রচণ্ড ধৈর্য ও কঠোর আল্লাহ প্রেমের চেতনাই তাদের লক্ষ্যে পৌঁছাতে সাহায্য করেছিলো। তারা তাদের দায়িত্ব পূর্ণরূপে সম্পাদন করতে পেরেছিলেন। তাই আমাদের তরুণদেরকেও হতাশাকে বধ করতে হবে। আশাকে জাগিয়ে রাখতে হবে। চিন্তাকে আরো প্রখর করে তুলতে হবে। ‘ধৈর্যের সফলতা নিশ্চিত’ এই তত্ত্বের পূর্ণরূপ আস্থাই খুলে দিতে পারে তারুণ্যের সম্ভাবনার দুয়ার।
আসহাবে কাহাফের কয়েকজন তরুণের জীবন্ত কাহিনী তো আমাদের দোরগোড়ায় এখনো উপস্থিত। তাদের ছিলো উচ্চ মনোবল, পর্বতের মত সাহস, আল্লাহর উপর পূর্ণ আস্থা। আল্লাহ তাদের ব্যাপারে আল কোরআনে বলেন যে, “হে নবী ! আপনার কাছে আমি তাদের (আসহাবে কাহাফ)-এর ইতিবৃত্ত সঠিকভাবে বর্ণনা করেছি, তাঁরা ছিল কয়েকজন তরুণ। তাঁরা তাদের পালনকর্তার প্রতি ঈমান আনয়ন করেছিল এবং আমি তাদেরকে সৎপথে চলার শক্তি বৃদ্ধি করে দিয়েছি। (সূরা : কাহাফ- ১৩)
উল্লেখিত বিষয়গুলোতে রয়েছে আমাদের জন্য প্রয়োজনীয় শিক্ষা, আত্মার খোরাক, চলার পাথেয় ও দ্বীনকে বাঁচানোর কৌশল। সকল প্রতিবন্ধকতা সত্ত্বেও ইসলামকে আপন মনে প্রানে টিকিয়ে রাখার এক উদগ্র বাসনার শ্রেষ্ঠ প্রলাপ। কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েও কিভাবে একটি সমাজ কিংবা জাতিকে সত্যের মঞ্জিল চূড়ায় পৌঁছানো যায় তার শ্রেষ্ঠ উদাহরণ। তারুণ্যের সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে যিনি আরব জাতিকে শান্তির পথে আনার প্রথম পদক্ষেপ গ্রহণ করেছিলেন। তিনি আরবের চিরচেনা পরিচিত মুখ আ’লামিন, সকলের প্রিয় মোহাম্মদ (সা.)। আরবের সমাজে লেগে থাকা অস্থিরতা, বর্বরতা, মারামারি, হানাহানি ও জান-মালের নিরাপত্তাহীনতা দূরীকরণের জন্য সর্বপ্রথম তিনি তরুণ সমাজকে হিলফুল ফুজুল নামক সংগঠনের অধীনে সংঘবদ্ধ করে আরবে শান্তির ডাক দিয়েছিলেন। যে সংগঠনের প্রভাব রাসুল সা. জীবনের এর শেষ দিন পর্যন্ত তার কাছে বর্তমান ছিলো। তিনি সবসময় বলতেন, “কেউ যদি এখনো আমার কাছে হিলফুল ফুজুলের দোহাই দিয়ে সাহায্য চাই। তাহলে আমি তাকে অবশ্যই সাহায্য করবো।” [২]
নবুয়াত লাভের পর সর্বপ্রথম যারা রাসুলের (সা.) ডাকে সাড়া দিয়েছিলেন, তাদের সকলেই ছিলেন তরুণ নওজোয়ান। হযরত আবু বকর (রা.), হযরত উমর (রা.) তরুণ বয়সে ইসলাম কবুল করেন। হযরত আলী (রা.) যখন ইসলাম গ্রহণ করেন তখন তিনি দশ বছরের বুঝ-জ্ঞান সম্পন্ন বালক। ইসলামের প্রথম মুয়াজ্জিন বেলাল (রা.) ও ছিলেন একজন তরুণ। যুদ্ধের ময়দানেও তরুণদের ভূমিকাই ছিলো অনস্বীকার্য। বদরের যুদ্ধে হযরত ‘মুআয ও মুআ’ওয়িয’ নামক দু’জন তরুণ সাহাবীই ইসলামের ঘোর দুশমন আবু জাহিলকে হত্যা করেছিলেন। এছাড়াও, ইসলামকে পৃথিবীর প্রতিটি কর্ণকুহরে মুখে করে নিয়ে গিয়েছিলেন এই তরুণ সেনানীরাই।
আল্লাহর অনুগ্রহ, রাসুলের ভালোবাসা, জান্নাত লাভের উচ্চাকাঙ্ক্ষাই তাদের এতদূর নিয়ে গিয়েছিল। পৃথিবীর কত শত অজানা পথ তারা পাড়ি দিয়েছিলো শুধুমাত্র নিজেদের মাঝে তারা সত্যের সুঘ্রাণ আঁচ করতে পারার কারণেই। তাদের কর্তব্যজ্ঞান তাদের চেতনাকে জাগ্রত করে রেখেছিলো এই কারণেই। যা থমাস আর্নল্ড এর ‘দ্যা প্রিচিং ইসলাম’ পড়লে কিছুটা আঁচ করা যায়। বিংশ শতাব্দীর প্রাচ্যবিদরা পর্যন্ত আরবের নওজোয়ানদের অন্তরের এই উদগ্র বাসনার প্রশংসা না করে পারেননি।
ইংরেজ প্রাচ্যবিদ ‘মন্টোগোমারি ওয়াট’ তাঁর ‘মুহাম্মদ ফি মাক্কাহ্’ গ্রন্থতে বর্ণনা করেছেন যে, “ইসলাম মূলত যুবকদেরই আন্দোলন ছিল। রাসূল সা. আরক্বাম বিন আবূ আরক্বাম নামক যুবকের বাড়ি থেকে এ আন্দোলন পরিচালনা করতেন। কেননা, দা‘ওয়াতী কার্যক্রম তার প্রচারের ওপর নির্ভর করে। আর যুবকরাই সেই দা‘ওয়াতকে মক্কা ও এর উপকণ্ঠে প্রচার করতেন। আর রাসূল সা.-এর হিজরতে সময় যুবক আলী বিন আবু তালিব রা.-এর ভূমিকা ছিল অকল্পনীয়। তেমনি রাসূল সা. তাঁর ওপর আস্থাও রেখেছিলেন।”
খায়বার বিজয়ী বীর, শে’রে খোদা হযরত আলী (রা.) যিনি কামূছ দুর্গের লৌহ কপাট উপড়িয়ে ফেলে এক হাতে নিয়ে এটিকে যুদ্ধের ঢাল হিসাবে ব্যবহার করেছিলেন, তখন তিনিও ছিলেন তারুণ্যদীপ্ত যুবক। মু’তার যুদ্ধে সেনাপতি ছিলেন খালিদ বিন ওয়ালিদ তিনিও ছিলেন তরুণ। স্পেন বিজয়ী সেনাপতি তারেক বিন জিয়াদ তিনিও ছিলেন তরুণ। এছাড়াও তরুণ মুহাম্মাদ বিন কাশিমের সিন্ধু বিজয়ের গৌরব গাঁথা ইতিহাস কি আমরা ভুলে গিয়েছি? কিভাবে সম্ভব হয়েছে এরকম অসাধ্য কাজগুলোকে তাদের সাধ্য করে তোলার?
সুতরাং, সমাজকে যদি গড়তে হয়, তাহলে তরুণদেরকেই এই কাজে এগিয়ে আসতে হবে। একটি জাতির কখনো সফলতার মুখ দেখা সম্ভব নয় যতক্ষণ না, তারা নিজেরা নিজেদেরকে সত্যের আলোই আলোকিত করে নিবে। বিশেষ করে, মুসলিম তরুণদের রয়েছে জাতিগঠনের দীর্ঘ সোনালী অধ্যায়। কিন্তু তারপরে ও যদি আজকের সাম্রাজ্যবাদের মুখের উপর তারা পলায়ন শুরু করে তাহলে কাপুরুষতার শেষ অধ্যায়টুকু তাদের হাতেই রচিত হবে। বর্তমান প্রতিটা মুসলিম তরুণকেই বুঝতে হবে ইসলামের ইতিহাসে মুসলিম সেনানায়কগন কোন ছোট-খাট গোষ্ঠীর সাথে সংঘাতে লিপ্ত হননি।
বরং তারাও আজকের দিনের আমেরিকার মত তখনকার দুই পরাশক্তি রোমান ও পারস্য সাম্রাজ্যের মুখোমুখি অবতীর্ণ হয়েছিলো। কিসের মাধ্যমে তারা সফলতা লাভ করেছিলো? একমাত্র আল্লাহর প্রতি অবিচল আস্থা, রাসুলের সা. দেখানো পথ ও তাদের নিজস্ব সাহসের বলেই সম্ভব হয়েছিল। আজকে আমাদের কি নেই যার ফলে আমরা সফলতার দোর গোড়ায় যেতে পারছিনা? আমাদের নেই পূর্বসুরীদের মত একখানা হৃদয়, যেখানে থাকবে আল্লাহর প্রতি অবিচল আস্থা, রাসুলের সুন্নাতের প্রতি মমতাবোধ, নিজেদের দায়িত্ব জ্ঞান সম্পর্কে ব্যাপক সচেতনতা। আমরা বাংলাদেশের মুসলামান। আমরা বাংলায় কথা বলি। এদেশের মাঝেই আমাদের বেড়ে উঠা। সুখ-দুঃখ, হাসি-কান্নার মাঝেই আমাদের জীবন চলমান। বাংলাদেশের সাথেই মিশে আছে আমাদের অস্তিত্বের দ্বারা। এধারার সূচনা হয়েছিল ১২০৬ সালে ইখতিয়ার উদ্দিন মোহাম্মদ বখতিয়ার খলজির বঙ্গদেশ জয় করার মাধ্যমে।
এরপর থেকে টানা ৫৫০ বৎসরের ইতিহাস বাংলায় মুসলিম শাসকদের ন্যায়ের ইতিহাস। এ ইতিহাসের কবর রচিত হয় ১৭৫৭ সালে পলাশির ময়দানে নবাব সিরাজুদ্দৌলার পতনের মাধ্যমে। এরপর টানা ১৯০ বৎসরের ইতিহাস বাংলার মুসলমানদের শোষণ বঞ্চনার ইতিহাস। নিজেদের শেষ রক্ত বিন্দু দিয়ে আমাদের পূর্বসুরীরা এই ভুমির প্রতিটা খণ্ডকে আকড়ে ধরে রাখার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহাস, হিন্দু ব্রাহ্মণ্যবাদীদের সাথে আঁতাত করে ইংরেজরা তাদের উপর দমন নিপিড়ন চালিয়ে তাদের গতিপথ রুদ্ধ করে দেয়। এরপর ১৯৪৭ সালে পাকিস্তান স্বাধীনতা অর্জনের মাধ্যমে বাংলাদেশও স্বাধীনতার অমীয় সুধা পান করে। কিন্তু ৪৭’ পরবর্তী থেকে বাঙ্গালী সেক্যুলাররা বাংলাদেশে রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনে জোরালো ভূমিকা পালন করার মধ্যে দিয়ে ইসলামকে এদেশ থেকে বিতাড়িত করার হীন চক্রান্তে মেতে ওঠে। যেটা এখন পর্যন্ত চলমানই রয়েছে। বাঙালি জাতীয়তাবাদের নামে ব্রাহ্মণ্যবাদী কালচারকে সার্বজনীন বলে চাপিয়ে দেওয়ার নিকৃষ্ট প্রচেষ্টা এখনো জারি আছে।
ফলে আমাদের তরুণ সমাজ আজ দিশেহারা। তাদের চিন্তার ভিত নড়ে উঠছে। তারা আজ নিজেদের আইডেন্টিটি নিয়ে ক্রাইসিসে ভুগছে। মুসলিম তরুণদের মনে আজ সংশয় জাগে, তার কারণটাই হচ্ছে, মুসলিম তরুণরা আজ নিজেদের গৌরব গাঁথা ইতিহাস ভুলে গেছে। ঐতিহ্যের সংস্কৃতির প্রতি মমতাবোধ তারা ছেড়ে দিয়েছে। ৫৫০ বছরের ন্যায়ের শাসন তাদের মনে কোন আত্মপক্ষের দাগ কাটেনা। অসত্যের কালোমেঘ তাদেরকে ঘিরে ধরেছে। যার ফলে দেশ, সমাজ,সভ্যতার কথা বাদ দিয়ে তারুণ্য আজ নিজেকে নিয়ে ব্যতিব্যস্ত।
এছাড়াও বিশ্বায়নের এ যুগে আকাশ সংস্কৃতির বিরূপ প্রভাব পড়েছে আমাদের মুসলিম তরুণ মানসে। পশ্চিমা বিশ্ব মুসলিম যুবসমাজকে ধ্বংস করার জন্য ইলেকট্রিক মিডিয়ার সাহায্যে চালাচ্ছে সাংস্কৃতিক আগ্রাসন। এ আগ্রাসনকে শক্তিশালী করার জন্য তারা এ সবের উৎপাদন ও নিয়ন্ত্রণ নিজেদের হাতে রেখে এর বেপরোয়া ব্যবহার করে চলেছে। এ প্রসঙ্গে এদেরই একজন অন্যতম সমাজ বিজ্ঞানী Michael Kunezik বলেন, Cultural imperialism through communication is a vital Process for Securing and maintaining economic domination and political hegemoni over others (Television is the Third World) অর্থাৎ ‘অর্থনৈতিক আধিপত্য ও রাজনৈতিক কর্তৃত্ব অর্জন ও তা বহাল রাখার জন্য যোগাযোগ মাধ্যমের সহায়তায় সাংস্কৃতিক সাম্রাজ্যবাদ প্রতিষ্ঠা এক গুরুত্বপূর্ণ প্রক্রিয়া’। স্যাটেলাইটের মাধ্যমে ডিশ এন্টিনার সাহায্যে পাশ্চাত্যের ধর্ম বিমুখ আল্লাহদ্রোহী ইন্দ্রিয়পরায়ণ ভোগবাদী জীবনের সকল অনুসঙ্গই আজ মুসলমানদের অন্দর মহলে ঢুকে পড়েছে। [৩]
পাশাপাশি, বর্তমান বিশ্বে পারমাণবিক অস্ত্রের চেয়েও ভয়ংকর রূপ নিয়েছে তামাকজাত পণ্য ও মাদকদ্রব্য। যা প্রতিনিয়ত ধ্বংস করে দিচ্ছে আমাদের তরুণ-তরুণীদের জীবন; ধ্বসিয়ে দিচ্ছে পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রের ভিত্তিমূল। সেই সাথে মাদক ব্যবসা বর্তমান বিশ্বে তৃতীয় বৃহত্তম ও সবচেয়ে লাভজনক ব্যবসায় পরিণত হওয়ায় চোরাকারবারীরা এই ব্যবসার প্রতি বেশি ঝুঁকে পড়েছে। তাছাড়া ভৌগলিক অবস্থান এবং প্রশাসনিক দুর্বলতার কারণে বাংলাদেশ হয়ে উঠেছে মাদক পাচারের আন্তর্জাতিক রুট। অধিকন্তু পার্শ্ববর্তী রাষ্ট্র ইচ্ছাকৃতভাবে এদেশের উঠতি বয়সের তরুণদের ধ্বংস করার জন্য তাদের সীমান্তে অসংখ্য হেরোইন ও ফেনসিডিল কারখানা স্থাপন করেছে এবং সেখানকার উৎপাদিত সব মাদকদ্রব্য এদেশে ব্যাপকভাবে পাচার করছে উভয় দেশের চোরাকারবারী সিন্ডিকেটের মাধ্যমে। এছাড়া স্থল, নৌ ও বিমান পথের কমপক্ষে ৩০টি রুট দিয়ে এ দেশে মাদক আমদানী ও রফতানী হচ্ছে। [৪]
এসব সমস্যা ছাড়াও আরো রয়েছে অনেক সমস্যা যেগুলো আজ আমাদের যুব মানসে সংকট সৃষ্টি করেছে। আমাদের শিক্ষানীতির পুরোভাগই ধর্মহীন শিক্ষানীতি। যার দরুন, পাঠ্যবইয়ে ধর্মীয় বিষয়াদী না থাকার ফলে আমাদের তরুনরা ধর্মীয় নৈতিকতা বোধ শিখতে পারছেনা। তাই যত দিন যাচ্ছে তারুণ্যে মানস সংকট প্রবল হয়ে উঠছে। “শতকরা ৫০ ভাগ মুসলিম প্রধান দেশ মালয়েশিয়ায় শিক্ষার সর্বোচ্চ স্তর পর্যন্ত ধর্মীয় শিক্ষা বাধ্যতামূলক। ফলে মালয়েশিয়া আজ সর্বক্ষেত্রে উন্নত। অথচ শতকরা ৯০ ভাগ মুসলিম প্রধান বাংলাদেশে ইসলামী শিক্ষা সবচেয়ে অবহেলিত। ফলে আমরা আজ সর্বক্ষেত্রে অধঃপতিত।” [৫]
শিক্ষা ব্যবস্থাপনার মূল স্তম্ভ হচ্ছে তিনটি; শিক্ষক, ছাত্র ও পরিচালনা কমিটি। দলীয় রাজনীতির বিষাক্ত ছোবলে এই তিনটি ক্ষেত্রই আজ ক্লেদাক্ত হয়ে গেছে। সর্বক্ষেত্রে দলীয় দিকই এখন প্রধান বিবেচ্য বিষয়। আগে শিক্ষকগণ ছিলেন সকলের শ্রদ্ধার পাত্র। এখন তারা নিজ দলীয় ছাত্রদের ভাই ও বন্ধুর পর্যায়ে নেমে এসেছেন। বিরোধী মতের ছাত্র ও শিক্ষকগণ প্রকাশ্যে বা অপ্রকাশ্যে পরস্পরের বিরোধী হিসাবে গণ্য হন। খাতায় নম্বর দেওয়ার নিরপেক্ষতাও এখন অনেকের ক্ষেত্রে দেখা যায় না দলবাজ ছাত্র নেতাদের রক্তচক্ষুর ভয়ে।
এমনকি মেডিকেল কলেজের মত গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেও অনৈতিক নম্বর দিয়ে কিংবা অনেক ক্ষেত্রে বিনা মৌখিক পরীক্ষায় পাশ করিয়ে দিতে শিক্ষকগণ বাধ্য হচ্ছেন। এরাই ডিগ্রী নিয়ে দু’দিন পরে চিকিৎসার নামে রোগী হত্যা করবে। কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়গুলিকে এখন আর মেধার লালনক্ষেত্র বলা যায় না। বরং এগুলি এখন রাজনৈতিক দলবাজি এবং দল পোষণের কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে। তাছাড়া কমিটি ব্যবস্থাপনায় রয়েছে গণতন্ত্রের নামে নির্বাচনী ব্যবস্থা ও গ্রুপিং। [৬]
আজকের তরুণদের মানস সংকটে নিপতিত হওয়ার অন্যতম আরেকটি কারণ হলো, মুসলমানরা আজ মিডিয়া সাম্রাজ্যবাদের কাছে জিম্মি হয়ে আছে। পাশ্চাত্য তার সাম্রাজ্যবাদী ডিসকোর্সকে সফল করার জন্য মুসলিম বিশ্বের উপর কতগুলো ট্যাগ জারি করে রেখেছে। তারা কথায় কথায় মুসলিমদের মৌলবাদী, সন্ত্রাসী ও জঙ্গি নাম দিয়ে তাদের অগ্রগতিকে ব্যহত করছে। উপরন্তু মুসলিম বিশ্বে তত্ত্বাবধায়ন করার জন্য, মুসলিম কন্ঠকে সারাবিশ্বে তুলে ধরার জন্য কোন মিডিয়া প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে না। বিশ্ব মুসলিম নেতৃত্ব আজ শতধা বিভক্ত। তাদের মাঝে ঐক্যের সংকট প্রকট। ফলে যার লাগাম পুরো মুসলিম বিশ্বকে টানতে হচ্ছে। আজকের মুসলিম তারুণ্যের চোখে সামনে যখন এগুলো ফুটে ওঠে তখন হতাশায় নিমজ্জিত হয়ে বসে থাকা ছাড়া আর কোন গত্যন্তর থাকে না। পাশ্চাত্য তার মিডিয়া দিয়ে মুসলিম ঐতিহ্যকেই শুধু প্রশ্নবিদ্ধ করছে না বরং পাশ্চাত্যের খুদকুঁড়ো খাওয়া এক শ্রেণীর মিডিয়া কর্মী ও সাংবাদিকের মাধ্যমে পুরো মুসলিম বিশ্বের উপর একধরনের মিথ্যা অবরোধ চাপিয়ে রেখেছে।
(পত্রিকায়) বিনোদনের পাতা নামে নায়ক-নায়িকা, গায়ক-গায়িকাদের নগ্ন, অর্ধনগ্ন ছবি এমনভাবে প্রকাশ করা হচ্ছে যা দেখে তরুনমনে যৌন সুড়সুঁড়ি সৃষ্টি হচ্ছে। ফলস্বরূপ তারা নোংরা পথে নিজেদেরকে বিকিয়ে দিচ্ছে । এছাড়া অশ্লীল ও কুরুচিপূর্ণ ছবি সম্বলিত পত্র-পত্রিকা ও বই-পুস্তকের সয়লাব চলছে সর্বত্র। তাই মুসলিম তারুণ্যই আজ শুধু সংশয়ে ভুগেনা। তার সাথে ভুগে সারা মুসলিম বিশ্ব। আজকের মুসলিমরা যদি আকাশ সংস্কৃতির যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করতে না পারে তাহলে, শুধু বাংলাদেশের তরুণদেরই নয় বরং সারা বিশ্বে মুসলমানদের উপরই এক বিশাল সাংস্কৃতিক হামলা বয়ে যাবে।
এই হামলার প্রভাব যতটুকু না মুসলিম বিশ্বে থাকা গচ্ছিত সম্পদের উপর পড়বে তার চাইতে বেশি পড়বে মুসলিম মানসের উপর। এজন্যই মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে ভাষণ দানকালে বলেছিলেন, “পশ্চিমা জগৎ ইন্টারনেটের মাধ্যমে অশ্লীল ও মারদাঙ্গা ছবি গোটা বিশ্বে ছড়িয়ে দিচ্ছে। এটি কার্বন-ডাই-অক্সাইড নির্গমন এবং মাদক চোরাচালানের চেয়ে কম বিপদজনক নয়। তাদেরকে অবশ্যই সর্বব্যাপী ইন্টারনেটের ব্যবহার বন্ধ করতে হবে। তথাকথিত বিশ্বসংবাদ মাধ্যমের একচেটিয়া অধিকার খর্ব করতে হবে।”
তিনি আরো বলেন, ” প্রচার মাধ্যমগুলোতে শুধু বিকৃত ছবিই প্রচার করা হচ্ছে না, আমাদের উপলব্ধি ক্ষমতাও নস্যাৎ করে দেয়া হচ্ছে। অতীতে পশ্চিমা মিশনারীগুলো দর্শন প্রচারে নিয়োজিত থাকত। বর্তমানে সংবাদ মাধ্যম আমাদের কাঙ্ক্ষিত মূল্যবোধ ও সংস্কৃতি ধ্বংস করে দিচ্ছে।” [৭] তাই আমাদের সচেতন হওয়া প্রয়োজন। আমাদের মুসলিম নেতৃবৃন্দকে এসব কাজে এগিয়ে আসা জরুরি। সারা বিশ্বের ইসলামী রাজনৈতিক দলগুলোকে যতটুকু রাজনৈতিকভাবে কাজ চালাচ্ছে তার চাইতে বেশি প্রয়োজন হয়ে পড়েছে ইসলামি সামাজিক আন্দোলন সৃষ্টির প্রবণতাবোধ।
আলহামদুলিল্লাহ! পুরো মুসলিম বিশ্বের উপর দিয়ে পাশ্চাত্যের চাপিয়ে দেওয়া ঝড়ের মোকাবেলায় একদল দক্ষ তারুণ্যের আবির্ভাব ঘটেছে, যারা পরিবেশের আলোকে, অবস্থার প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করে কাজ করছে। এমনকি আমাদের তরুণ সমাজের বিশাল একটা অংশ ফিরে আসছে সেই অন্ধকারময় নীল আঁচলের ছোঁয়া থেকে। বিশেষ করে বাংলাদেশের তরুণদের মাঝে এক ধরনের হুঁশ ফিরে আসছে মনে হচ্ছে। তারাও এখন দৃঢ় মনোবল ও কঠিন সাহসের সাথে সত্য, সুন্দরের পথচলায় অবতীর্ণ হচ্ছে। এখন প্রয়োজন তরুণদেরকে সাপোর্ট। তাদেরকে আমরা যতটুকু সাপোর্ট করতে পারবো তারা ততই এগিয়ে যাবে সামনের পানে।
কবি সুকান্ত ভট্টাচার্য্য তার ‘আঠারো বছর বয়স’ কবিতায় অনেক সুন্দরভাবে তারুণ্যের মনন জগতকে তুলে ধরেছেন। আঠারোর তারুণ্য যে কতটা শক্তিশালী তার গুণ গেয়েছেন ঠিক এইভাবে, “আঠারো বছর বয়সের নেই ভয়/ পদাঘাতে চায় ভাঙতে পাথর বাধা/এ বয়সে কেউ মাথা নোয়াবার নয়/আঠারো বছর বয়স জানে না কাঁদা।” আঠারো শুধু বয়সের নাম কি’বা অলসতার গন্ধ শোঁকা নয় বরং আঠারো চাইলে যেকোন কিছুকে দুমড়ে মুচড়ে দিতে পারে। ভেঙে যাওয়া হাল মেরামত করতে পারে। জাতির ইতিহাস ঐতিহ্য পূনর্গঠন করতে পারে। তিনি বলেন, আঠারো বছর বয়স যে দুর্বার/পথে প্রান্তরে ছোটায় বহু তুফান/দুর্যোগে হাল ঠিক মতো রাখা ভার/ক্ষত-বিক্ষত হয় সহস্র প্রাণ/আঠারো বছর বয়সে আঘাত আসে/অবিশ্র্রান্ত; একে একে হয় জড়ো/এ বয়স কালো লক্ষ দীর্ঘশ্বাসে/এ বয়স কাঁপে বেদনায় থরোথরো। [৮]
যোগ্য নেতৃত্ব ও কর্মতৎপরতার মাধ্যমে উন্নত দেশ ও জাতি গঠনে অগ্রগতির ধারাকে অব্যাহত রাখতে তারুণ্যের ভূমিকার কোনো বিকল্প নেই। এ জন্য তাদেরকে উপযুক্ত জ্ঞানার্জনের মাধ্যমে যোগ্য হতে হবে। যাবতীয় ত্রুটি- বিচ্যুতি, দুর্বল ও আলস্যতা দূর করে সাহসি হতে হবে। নৈরাশ্য ও হতাশাকে পদদলিত করে পরাধীনতার শৃঙ্খল ভেঙ্গে সম্মুখপানে এগিয়ে যেতে হবে দৃঢ়তার সঙ্গে। তাইতো মিশরের কবি ইব্রাহিম নাজি’ তারুণ্যের এই ত্যাগ- তিতিক্ষাকে আরো উৎসাহ দিয়ে বলেছেন- “যখন চক্ষু ঘুমিয়ে পড়ে তখন আমরা যুবকরা ভোরে জাগা পাখির ন্যায় প্রত্যুষে জাগ্রত হয়ে ফজরকে অভ্যর্থনা জানাই। আমরা যুবকরা সবাই মিলে প্রকৃত মর্যাদা অর্জনে ঝাঁপিয়ে পড়ি। (জেনে রাখ) যে বিজয়ের জন্য সকাল সকাল ঝাঁপিয়ে পড়ে, সেই বিজয় ছিনিয়ে আনে।” [৯]
ইতিহাস সাক্ষী, তাকওয়াবান যুবকদের দ্বারা পৃথিবী উপকৃত হয়েছে এবং পৃথিবীতে উত্তম আদর্শ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। আবার পথভ্রষ্ট যুবকদের দ্বারা পৃথিবীর বহু সভ্যতা ধ্বংস হয়েছে। মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) তাকওয়াবান যুবকদের নিয়ে বদর, ওহুদ, খন্দক ও তাবুকসহ অন্যান্য যুদ্ধে বিজয়লাভ করেছেন। চীন বিপ্লব, ফরাসি বিপ্লব এবং বাংলাদেশের ভাষা আন্দোলন ও স্বাধীনতার যুদ্ধেও লাখ লাখ যুবকের আত্মত্যাগ ও ভূমিকা স্মরণীয় হয়ে আছে। “ফরাসী বিপ্লবের জন্যে যেই বিশেষ ধরণের নৈতিকও মানসিক ভিত রচনারই প্রয়োজন ছিলো, যা তৈরি করেছিলেন রুশো, ভল্টেয়ার ও মন্টেস্কোর মতো দার্শনিক।
কার্ল মার্ক্সের দর্শন এবং লেলিন ও ট্রটক্সির নেতৃত্ব আর হাজার হাজার সমাজতান্ত্রিক কর্মীর ত্যাগের বদৌলতেই রুশ বিপ্লব সম্ভব হয়েছিল, যারা নিজেদের জীবনকে সমাজতন্ত্রের ছাঁচে ঢেলে গঠন করেছিলো..ঠিক তেমনি, একটি ইসলামী সমাজ ও কেবল তখনি সংঘটিত হতে পারবে, যখন কুরআনী দর্শন ও মুহাম্মদ রাসূলুল্লাহর (সঃ) আদর্শের ভিত্তিতে তারুণ্যের মাঝে একটি গণজাগরণ তৈরি হবে এবং সামাজিক জীবনের মানসিক, নৈতিক, মনস্তাত্বিক ও সাংস্কৃতিক ভিত্তিসমূহকে কর্মের প্রচণ্ডতায় আমূল পরিবর্তিত করে দেয়া সম্ভব হবে।” [১০]
আমাদের তরুণদের আজ বুঝতে হবে যে তারা যদি দেশ ও সমাজ গঠনে এগিয়ে না আসে। তাহলে এ জাতির নিজে নিজে পরিবর্তন হওয়া বাতুলতা ব্যতিত আর কিছুই নয়। এজন্য এ জাতির তরুণদেরকে উদ্দেশ্য করে কবি কবিতায় বলেছেন, আমরা যদি না জাগি মা কেমনে সকাল হবে, তোমার ছেলে উঠবে মাগো রাত পোহাবে তবে। [১১] তরুণরা যদি এই গুনে ধরা বাঙালি সমাজের প্রয়োজনে এগিয়ে আসে তাহলেই সম্ভব এ জাতিকে উন্নতির জোয়ারে বইয়ে নেওয়ার। আর তারা যদি একাজে অলসতা করে তাইলে এই বাধায় আর জোয়ার বইবে না। তাই আর দেরী নয়, আসো হে তরুণ, কাঁধে কাঁধ মিলে নেমে পড়ি এই মন্ত্রে মুগ্ধ হয়ে, এ জাতিকে যতদিন না তার ঘোর অমানিশা থেকে সত্যের আলোয় না ফেরাতে পারছি ততদিন আর আমি থেমে নেই।
এসো কবি আল মাহমুদের মুখে মুখ লাগিয়ে বলি,- “আমাদের এ মিছিল নিকট অতীত থেকে অনন্ত কালের দিকে…আমরা বদর থেকে ওহুদ হয়ে এখানে, শত সংঘাতের মধ্যে এ শিবিরে এসে দাঁড়িয়েছি….কে প্রশ্ন করে আমরা কোথায় যাবো ? আমরা তো বলেছি আমাদের যাত্রা অনন্ত কালের…. উদয় ও অস্তের ক্লান্তি আমাদের কোনদিনই বিহবল করতে পারেনি।” [১২]
তথ্যসুত্র:
[১]. সূরা রোম : আায়াত নং- ৫৪
[২]. [(নুবাইরি : পৃ. ১/১০১), (সিরাতে ইবনে হিশাম : ১/১৪১)]
[৩]. শাহ মুহাম্মাদ হাবীবুর রহমান, প্রবন্ধ : পুঁজিবাদ, সমাজবাদ ও ইসলাম, আত-তাহরীক ৪/৬ মার্চ ২০০১, পৃ: ২৭, ।
[৪]. মুহাম্মাদ আসাদুল্লাহ আল-গালিব, দরসে কুরআন : মদ, জুয়া, ভাগ্য নির্ধারক শর নিষিদ্ধ বস্ত্ত, আত-তাহরীক, সেপ্টেম্বর ২০১২, পৃ: ৭-৮।
[5]মুহাম্মাদ আসাদুল্লাহ আল-গালিব, প্রবন্ধ: শিক্ষা ব্যবস্থায় ধস: কিছু পরামর্শ, আত-তাহরীক ৭/৫ ফেব্রুয়ারী ২০০৪, পৃ: ৩।
[৬]. ঐ, পৃ: ৫।
[৭]. মাসিক আত-তাহরীক ২/১২ সেপ্টেম্বর ১৯৯৯, পৃ: ১৯।
[৮]. ‘ছাড়পত্র’ কাব্যগ্রন্থ থেকে নেওয়া হয়েছে।
[৯]. https://youtu.be/gnB7Eec_PB0
[১০]. ইসলামী বিপ্লবের পথ- আবুল আ’লা / পৃষ্ঠা নং-১৬ [উদ্ধৃত অংশে হালকা ভাষাগত চেঞ্জ আনা হয়েছে।]
[১১]. কবিতা:আমি হবো সকাল বেলার পাখি – কাজী নজরুল ইসলাম /
[১২]. কবিতা : আমাদের মিচিল/ কবি আল মাহমুদ